50%
পরিবর্তন ও প্রত্যাবর্তন (পেপারব্যাক)
প্রকাশনী : মাকতাবাতুল ফুরকান
বিষয়: ইসলামী সাহিত্য ও সফরনামা, দ্বীনের দিকে ফেরার গল্প, প্রফেসর হযরতের বই
সংস্করণ: দ্বিতীয়
পৃষ্ঠা : 128
প্রচ্ছদ : পেপারব্যাক
প্রকাশকাল: 2019-03-10
আইএসবিএন: 978-984-92292-4-2
ভাষা: বাংলা
মুসলিম-ঘরে জ›ন্মগ্রহণ করলে সহজেই মুসলিম হওয়া যায়। এটি একটি বড় সৌভাগ্য। তবে প্রকৃত ঈমানদার হতে হলে তাকে জেনে-শুনেই ইসলামে প্রবেশ করতে হয়। বর্তমানে অসংখ্য মুসলমান নিজ ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞ থাকায় নিজেদের ধর্মীয় স্বকীয়তা বিসর্জন দিয়েই চলেছে। এতে ব্যক্তিগত অবহলো যেরকম দায়ী, তেমনি সমাজ ও সংস্কৃতির প্রত্যক্ষ…
প্রকাশনী : মাকতাবাতুল ফুরকান
বিষয়: ইসলামী সাহিত্য ও সফরনামা, দ্বীনের দিকে ফেরার গল্প, প্রফেসর হযরতের বই
সংস্করণ: দ্বিতীয়
পৃষ্ঠা : 128
প্রচ্ছদ : পেপারব্যাক
প্রকাশকাল: 2019-03-10
আইএসবিএন: 978-984-92292-4-2
ভাষা: বাংলা
মুসলিম-ঘরে জ›ন্মগ্রহণ করলে সহজেই মুসলিম হওয়া যায়। এটি একটি বড় সৌভাগ্য। তবে প্রকৃত ঈমানদার হতে হলে তাকে জেনে-শুনেই ইসলামে প্রবেশ করতে হয়। বর্তমানে অসংখ্য মুসলমান নিজ ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞ থাকায় নিজেদের ধর্মীয় স্বকীয়তা বিসর্জন দিয়েই চলেছে। এতে ব্যক্তিগত অবহলো যেরকম দায়ী, তেমনি সমাজ ও সংস্কৃতির প্রত্যক্ষ প্রভাব রয়েছে। সেক্যুলার শিক্ষাব্যবস্থার মধ্য দিয়ে জাতি বেড়ে উঠলেও ধর্মীয় মূল্যবোধ অর্জনে ব্যর্থ হয়। ফলে উদাসীনতা চরম পর্যায়ে গিয়ে ঠেকে। তবে যারা পিতা-মাতার দ্বীনদারীতে প্রভাবিত হয়ে বা অন্য কোনো উপায়ে কোনো আল্লাহওয়ালা বা আলেমের সান্নিধ্য অর্জন করতে সক্ষম হন, তারা সত্যিকার অর্থে মুসলিম হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার সুযোগ লাভ করেন। তখন ইংরেজি শিক্ষিত দ্বীনদারদের অনেকেই নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করেন এবং সফলতার পথে এগিয়ে যান। এ বইয়ে এরকমই একজন মানুষের দ্বীনের পথে ফিরে আসার গল্প বর্ণনা করা হয়েছে।
কেবলই স্মৃতিচারণ কিংবা অতীত-গৌরব বর্ণনা এ বইয়ের উদ্দেশ্য নয়; বরং এখানে অতীতের পঙ্কিলতাকে ছাপিয়ে ইসলামী দর্শনে নিজেকে আবিষ্কার করার নতুন উপলব্ধি ও চেতনাকেই প্রকাশ করা হয়েছে। এতে আধুনিক বিজ্ঞান-মনস্ক ও পাশ্চাত্যের সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত অনেকের মনে নতুন ভাবনার সৃষ্টি হতে পারে। হয়তো তারা ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় নিবেন—এ-ই প্রত্যাশা।
Original price was: 200.00৳ .100.00৳ Current price is: 100.00৳ .
Md Adam Ali –
বুক রিভিউ : পরিবর্তন ও প্রত্যাবর্তন
লিখেছেন : Ahnaf Adib
তারিখ : ৩ মে ২০২০
পরপর দুই কাপ চা খাওয়ার মতো ঘটনা অনেক চা প্রিয় মানুষের জীবনেই ঘটেছে।বিশেষত চায়ের স্বাদটা যখন জিহ্বাকে অতিক্রম করে হৃদয় পর্যন্ত পৌছে যায়। পরপর দুই কাপ চা খাওয়ার ঘটনা – ‘ঐ মামা” আরেক কাপ চা দেন তো’ – বলা মানুষ গুলোর ক্ষেত্রেও হয়তো বহুবার ঘটেছে।
কিন্তু বই প্রিয় মানুষগুলোর জীবনে একটা বই পরপর দুইবার পড়ার ঘটনা সম্ভবত খুব বেশি নয়। আর যারা রেগুলার বই পড়েন না, তাদের ক্ষেত্রে এই সম্ভাবনা তো মাসে এক কাপ চা খায় না – এমন ব্যক্তির পরপর দুই কাপ চা খাওয়ার মতো। আমি রেগুলার বই পড়ি এমন না, তবে “পরিবর্তন ও প্রত্যাবর্তন” বইটি একবার পড়ে কেমন যেনো হৃদয় ছোঁয়া একটা অনুভুতি পেয়ে গেলাম। তাই তো একবারেই দুবার পড়ার লোভটা আর সামলাতে পাড়লাম না।
বইয়ের প্রথম দুটি লাইন – “আমি একজন নগণ্য মানুষ।কোটি মানুষের ভিড়ে ‘এক’ কোনো সংখ্যা নয়। তবে জাতিগত যে পরিচয়,তাতে একই অনেককে প্রতিনিধিত্ব করে।”
সত্যিকার অর্থেই লেখক “মুহাম্মদ আদম আলী” সাহেব প্রত্যেকটি সাধারন ইংরেজি শিক্ষিত মুসলমানের একটা প্রতিছ্ববি বইটিতে তুলে ধরেছেন।তবে ব্যতিক্রমটা হলো তার সেই জিবনের পরিবর্তন ও প্রত্যাবর্তন।
বুয়েটের জীবন, নেভীর জীবন,টি এস সির জীবন, রঙ্গীন জীবন, কবিতার জীবন,হুযুরদের জীবন। আমাদের আশে পাশে ঘোরাঘুরি করা অসংখ্য জিবনের গল্প লুকিয়ে আছে বইটিতে। তবে লেখক এই সব জিবনের ভিড়ে পেয়েছিলেন “আসল জিবনের” খোজ। পরিবর্তিত একটা জিবন।
“একসময় জিবনকে শুধু উপভোগ করেছি তারুণ্যের উচ্ছলতা ও যৌবনের মাদকতার সংগে।জীবন থেকে দু’হাত ভরে শুধু গ্রহন করেছি;জিবনকে কিছু দেওয়ার দায় কখনো বোধ করিনি।
কিন্তু জন্মের মাধ্যমে আমি যে মৃত্যুর দায় গ্রহন করেছি।
এখন মৃত্যুর জন্য নিরন্তন প্রস্তুতি—এর অর্থ কি?এর মর্ম ও তাৎপর্য কি?এটা উপলব্ধি করার জন্য এবং মৃত্যুর প্রস্তুতির পথে জীবনকে পরিচালিত করার জন্য প্রয়োজন মানুষের ভেতরের সত্তার আমুল কিছু পরিবর্তন।
কীভাবে আসে মানূষের জীবনের অন্তর্জগতে এরুপ পরিবর্তন?
শুনেছি এই পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন কোনো না কোনো আলকিত মানূষের সান্নিধ্য গ্রহন এবং নিস্কস্প আলোকবর্তিকারুপে জীবনের চলার পথে তাকে অনুসরন!
কোথায় পাবো এমন আলোকিত মানুষ ! কোথায় তিনি যার কাছে রয়েছে হৃদয় ও আত্নাকে সংশোধন করার এবং আলোকিত করার পরশপাথর?
জীবনে চলার পথে হঠাৎ একদিন সেই আলোকিত মানুষটির দেখা আমি পেলাম এবং বুঝতে পারলাম,কাকে বলে মানুষ ! কেমন হয়ে থাকে সেই মানুষ যিনি মাটির হয়েও নূরের !”
এই পর্যন্ত পরিবর্তনের অনুভুতি-আকুতি আর প্রারম্ভটা ব্কিয়ের ভূমিকা থেকে উল্লেখ করলাম।
প্রত্যেকটা মানুষের ভেতরের কথাগুলো বোধয় একই রকম।জিবনের গল্পগুলোর রয়েছে বেশ মিল।আমরা সবাই বেচে থাকতে চাই চিরদিন।ধর্ম কর্ম যা আছে মনে হয় তা দিয়েই চলে যাবে। ভার্সিটির বছর গুলো….
“গত চার বছরে অনেকের সংগেই পরিচয় হয়েছে।কত কিচ্ছা কাহিনী জমে গিয়েছে,কত স্মৃতি! এত স্মৃতি নিয়ে বেচে থাকাই মুশকিল।স্মৃতির ভারেই মানুষ একদিন মরে যায়। স্মৃতি বিস্মৃতিই দুনিয়ার নিয়ম।আমি এখনই বিস্মৃতির অতল গহব্বরে হারিয়ে যেতে চাই না।আরো দীর্ঘদিন বাঁচতে চাই।এ স্বাধীন জীবন উপভোগ করতে আমি যেনো এক চাতক পাখি।”
“টি এস সির আকাশটা অন্যরকম।ঠিক ঐখানটাতে বসে না দেখলে বুঝে আসে না।সংগে অবশ্যই সংগী থাকতে হয়। নদীতে সারি সারি নৌকা যেমন,তেমনি গুচ্ছ গুচ্ছ আড্ডা। ঠিক তরীর মতোই ভাসমান।ভাসে জীবন-যৌবন সব।
“শেষ কবে কোরান ছুঁয়ে দেখেছি,মনে পড়ে না।মা-বাবা ছোট বেলায় যেসব সুরা-কিরাত শিখয়েছিলেন,তা দিয়ে ভালোই চলছে জীবন।আমৃত্যু তা নিয়েই কাটবে হয়তো। নতুন কিছু শেখার আছে বলে তো মনে হয় না।চার রাকাত নামায পড়তে চারট সুরা হলেই চলে।সেখানে আমার দশ-বারোটা সুরা মুখস্ত আছে। এমন কঠিন মুখস্ত, এক শ্বাসেই সুরা ফাতিহা শেষ করতে পারি।নামায পড়া তো মুহুর্তের ব্যপার!
“ইসলাম নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করার কিছু আছে বলে মনে হতো না।নামায-রোযা করলেই তো ইসলাম টিকে থাকে। তা তো একটু-আধটু করছিই।আর কী লাগে? চারিদিকের পরিবেশকে তো আর অস্বীকার করা যায় না।সব কিছু ছেড়ে কি বৈরাগী হয়ে যেতে হবে?”
এমন সব চিন্তা চেতনার মাঝেই চলছে আমাদের জীবন।আমাদের জীবনের আসল লক্ষ্য কি? দ্বিনের পথে আমাদের বাধাটা আসলে কোথায়?
“সব ছেড়ে দ্বীনের পথে চলে যাবো? এতসব আনন্দড়সব মাটি হয়ে যাবে ! আনন্দ কাকে বলে,তাই জানতে পারলাম না এখনো। কবিতায় কি আনন্দ, যেখানে নিরানন্দ মানুষেরা ধোয়ায় লুটোপুটি খেয়ে যৌবন শেষ করছে। শরীর শক্ত পোক্ত করে মার্শাল আর্ট দিয়েই বা কি হবে যেখানে হয়তো কারো সংগে কোনোদিন লড়তেই হবে না।
জগত সংসারে সব বিলাসী মনে হয়।বিলাসিতায় ডুবে গেলে আনন্দও বরক্তি ঠেকে।ভাবনা বিরক্তিতে গিয়ে শেষ হয়।
এই বইটি চিন্তার জগতে একটা বিশেষ পরিবর্তন আনার জন্য আর নিজের জীবনে লুকিয়ে থাকা প্রকাশ্য সত্যকে তুলে ধরেছে যথাযথ ভাবেই।পরিবর্তন কেমন হতে পারে সেটা এই বইয়ের দুইটা দৃশ্যপট এমন ভাবে চিত্রিত করেছে যা সত্যি কল্পনাতীত সুন্দর।
পরিবর্তনের এমনই একটা উদাহরন আমি উল্যেখ করবো যেটা পড়ার পর আমি নির্বাক হয়ে গিয়েছিলাম,আমার চিন্তা চেতনা ঐ মুহুর্তের জন্য স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলো।পরিবর্তন কি তাহলে এমনো হতে পারে? বইয়ের এক জায়গায় সুনীলের একটা কবিতা আছে। কবিতাটি লেখকের মুখস্তই ছিলো।বুয়েটে থাকা কালীন কোনো এক বিকেলে টি এস সি তে আবৃতী হচ্ছিলো :
“…তুমি এই যে বসে আছো / আংগুলে ছোঁয়ানো থুতনি / কপালে পড়েছে চুর্ন চুল / পাড়ের নকশায় ঢাকা পা / ওষ্ঠাগ্রে আসন্ন হাসি / এই দৃশ্যে অমরত্ব / তুমি তো জানো না, নীরা,আমার মৃত্যুর পরও এই ছবি থেকে যাবে…”
প্রিয়তয়ামার এমন দৃশ্য বর্তমানে প্রায় প্রতিটি ছেলের হৃদয়েই হয়তো থাকে। তুমি তো জানো না নীরা আমার মৃত্যুর পরও এই ছবি থেকে যাবে…এমন লাইন পেলে তো কোনো কথাই নেই! মিথ্যা করে হলেও প্রিয়তমাকে এই লাইনটা হয়তো সবাই শোনাতে চাইবে।
কিন্তু আদম আলী সাহেব কবিতার এই কথামালাকে এমন এক দৃশ্যের সাথে বেঁধেছেন,যেটা কেবল আলোকিত মানুষদের পক্ষেই সম্ভব। লেখক কোরানের একটা সুরা মুখস্থ করেছিলেন। যেটা তিনি তার জীবনের সবচেয়ে প্রিয় মানুষটিকে শোনাবেন বলে চিন্তা করেছেন। লেখকের ভাষায়…
” হযরত অযু করলেন। তার পর কুরআন মাজীদ নিয়ে আমার মুখো মুখি বসলেন। সুরা জাসিয়া বের করে আমাকে তেলোয়াত শুরু করতে বললেন। আমি পড়ছি তিনি শুনছেন। কি অপুর্ব দৃশ্য ! আমার মৃত্যুর পরও এই ছবি থেকে যাবে…”।
কি অদ্ভুত মিল লাইন দুটির মধ্যে।পরিবর্তন আর প্রত্যাবর্তন আসলে এমনই হয়।তৃপ্তি আর সুখ সুনীলের লেখা লাইনেও আছে, আর এই লাইনগুলোতেও আছে। কিন্তু পার্থক্য হলো আগের কথার তৃপ্তি খুব অল্প সময়ের ব্যবাধানেই অতৃপ্তিতে পরিনত হয়ে যাবে।কিন্তু এই কথাগুলোর অনুভুতি আর তৃপ্তি যেন দিন দিন বাড়তেই থাকবে।
ভালোবাসার এ এক ভিন্নরুপ।আমার মনে হয় এটি ভালোবাসার সত্যিকার রুপ। এর মধ্যে কোনো ভনিতা নেই,নেই কোনো কৃত্তিমতা।লেখকের এই ভালোবাসার প্রকাশ তার বইয়ের পাতায় পাতায়।
আমি আরো বেশি অবাক হয়েছি যখন দেখলাম, আদম আলী সাহেব তার লেখা এই বইটি, যেখানে তিনি তার অতীত জীবনের কথাগুলো বলেছেন এবং প্রত্যেক পৃষ্ঠাতে হযরতে কথা লিখেছেন, তারপরও ভালোবাসার এই মানূষটির পুরো একটি বয়ান স্বতন্ত্রভাবে বইয়ের সাথে যোগ করেছেন। এ যেনো তার সাথে নিজেকে জড়িয়ে রাখার,কাছাকাছি থাকার এক অন্তর্নিহিত ব্যপার।
আমাদের জীবনে প্রতিনিয়তই পরিবর্তন ঘটছে। তবে কিছু কিছু পরিবর্তন সাধারন মানুষকে বানায় আলোকিত মানুষ। এমনই এক পরিবর্তনের ভীত গড়ে দেবে “পরিবর্তন ও প্রত্যাবর্তন” বইটি। আল্লাহ তাআলা তার শান অনুযায়ী প্রফেসর হরযত ও লেখককে প্রতিদান দান করুন আমীন।
শেষ কথা: এই কথাগুলো বই থেকেই নেয়া…
“হটহাট মন্তব্য আমাদের মন মানসিকতা সব নষ্ট করে দিচ্ছে।মানুষের ভালো দেখেও তার মন্দগুলো নিয়েই আলোচনার ঝড় তুলি।আবার মন্দগুলোও ঠিক মন্দ নয়। আমার বিবেচনায় ধরে না বলে মন্দ ভেবে বসে আছি। ভালো-মন্দের সংগা কবে শিখেছি? কে-ই বা আমাদের শেখাল? সেক্যুলার এডুকেশন সিস্টেমের সকল জ্ঞান আর এই অবচেতন মনই এসসব সমীকরনের জন্য দায়ী….
মন্দ স্বভাব না পাল্টালে ঈমান টেকে না।”