50%
ইসলাম সম্পর্কে প্রত্যেক খ্রিস্টানের যা জানা উচিত
অনুবাদক : মুহাম্মাদ আদম আলী
প্রকাশনী : মাকতাবাতুল ফুরকান
বিষয়: ইসলামী শরীয়ত ও মাসআলা-মাসাইল, ইসলামী দর্শন ও ধর্মতত্ত্ব
সংস্করণ: প্রথম
পৃষ্ঠা : 160
প্রচ্ছদ : হার্ড কভার
প্রকাশকাল: 2021-04-27
আইএসবিএন: 978-984-95227-2-0
ভাষা: বাংলা
ইসলামের পরিচিতি-বিষয়ক অনেক বই-পুস্তক রচনা করা হয়েছে। তবে একজন খ্রিস্টান যদি এই ধর্ম-বিশ্বাস সম্পর্কে আরও অধিক জানতে চান, তাহলে তাকে যেসব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়, এ ব্যাপারে খুব কম বইয়েই আলোকপাত করা হয়ে থাকে। ইহুদী, খ্রিস্টান এবং মুসলিমদের একটি অদৃশ্য বন্ধন যে ইবরাহীম…
অনুবাদক : মুহাম্মাদ আদম আলী
প্রকাশনী : মাকতাবাতুল ফুরকান
বিষয়: ইসলামী শরীয়ত ও মাসআলা-মাসাইল, ইসলামী দর্শন ও ধর্মতত্ত্ব
সংস্করণ: প্রথম
পৃষ্ঠা : 160
প্রচ্ছদ : হার্ড কভার
প্রকাশকাল: 2021-04-27
আইএসবিএন: 978-984-95227-2-0
ভাষা: বাংলা
ইসলামের পরিচিতি-বিষয়ক অনেক বই-পুস্তক রচনা করা হয়েছে। তবে একজন খ্রিস্টান যদি এই ধর্ম-বিশ্বাস সম্পর্কে আরও অধিক জানতে চান, তাহলে তাকে যেসব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়, এ ব্যাপারে খুব কম বইয়েই আলোকপাত করা হয়ে থাকে। ইহুদী, খ্রিস্টান এবং মুসলিমদের একটি অদৃশ্য বন্ধন যে ইবরাহীম আলাইহিস সালামের সূত্রে গাঁথা রয়েছে, তা অনেকেই এড়িয়ে যান―তাদের সরাসরি কাফের বা অবিশ্বাসী বলে দ্বীনী দাওয়াত থেকেও দূরে থাকেন।
এই বইটিতে খ্রিষ্টবাদ এবং ইসলামী ধর্মতত্তে¡র মৌলিক পার্থক্য ও সাদৃশ্যসমূহ আলোচনা করা হয়েছে। এতে ইসলামের ধর্মীয় বিশ্বাস ও আচার-আচরণের ব্যাখ্যা এবং ইসলাম ও মুসলিম সম্পর্কে বহুল জিজ্ঞাসিত কিছু প্রশ্নের জবাব তুলে ধরা হয়েছে। উল্লেখ্য, আধুনিক পৃথিবীতে সকল ধর্ম―বিশেষ করে ইসলামকে―এর চরমপন্থী, অজ্ঞ এবং বিজাতীয় সদস্যদের উগ্র কর্মকাণ্ডের ভিত্তিতেই সংজ্ঞায়িত করা হয়ে থাকে। এই সংক্ষিপ্ত ও সহজ বইটিতে ইসলামের মূল ভাবধারা ও সৌন্দর্য বর্ণনা করার চেষ্টা করা হয়েছে। আশা করা যায়, এতে অমুসলিমদের মনে ইসলাম সম্পর্কে যে অহেতুক মিথ্যা-ভয় ও নানা সন্দেহ দানা বেঁধে ওঠে, তা দূরিভ‚ত হবে।
লেখক পরিচিতি
রুকাইয়া ওয়ারিস মাকসুদ। জন্ম ১৯৪২ সালে, লন্ডনে। ইউনিভার্সিটি অব হাল থেকে ১৯৬৩ সালে খ্রিষ্টধর্মতত্ত্বে স্নাতক (অনার্স) ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯৬ সালে অবসরগ্রহণের পূর্বপর্যন্ত ইংল্যান্ডের বিভিন্ন স্কুলে ধর্মবিষয়ে শিক্ষকতা করেছেন। তিনি ১৯৮৬ সালে ইসলামগ্রহণ করেন এবং তখন থেকেই ইংরেজভাষীদের মধ্যে ইসলামী ধর্মবিশ্বাসের অপূর্ব সৌন্দর্য ও সত্যতার প্রচার-প্রসারে কাজ করে যাচ্ছেন। এ পর্যন্ত তিনি চল্লিশেরও অধিক ধর্মীয় গ্রন্থাবলী রচনা করেছেন।
Original price was: 300.00৳ .150.00৳ Current price is: 150.00৳ .
admin –
বই: ইসলাম সম্পর্কে প্রত্যেক খ্রিস্টানের যা জানা উচিত (“What Every Christian should know about Islam”-এর বাংলা অনুবাদ)
মূল লেখিকা: রুকাইয়া ওয়ারিস মাকসুদ
অনুবাদ: মুহাম্মাদ আদম আলী
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ১৬০
প্রকাশনী: মাকতাবাতুল ফুরকান
রিভিউ লিখেছেন জাওয়াদ ইবনে ফরিদ; ০৬ মে ২০২১
রুকাইয়া ওয়ারিস মাকসুদ। ১৯৪২ সালে ব্রিটেনে জন্ম নেন। ১৯৮৬ সালে ইসলামগ্রহণ করেন এবং তখন থেকেই ইংরেজভাষীদের মধ্যে ইসলামী ধর্মবিশ্বাসের অপূর্ব সৌন্দর্য ও সত্যতার প্রচার-প্রসারে কাজ করে যাচ্ছেন নিরলসভাবে। সালে অবসরগ্রহণের পূর্বপর্যন্ত ইংল্যান্ডের বিভিন্ন স্কুলে ধর্মবিষয়ে শিক্ষকতা করেছেন। তিনি এ পর্যন্ত তিনি চল্লিশেরও অধিক ধর্মীয় গ্রন্থাবলী রচনা করেছেন।
অতি সম্প্রতি Maktabatul Furqan এই লেখিকার অন্যতম “What every Christian should know about Islam” বইটি অনুবাদ করে “ইসলাম সম্পর্কে প্রত্যেক খ্রিস্টানের যা জানা উচিত” নামে প্রকাশ করেছে। বইটি বেশ দ্রুত অনূদিত হয়ে প্রকাশনার আলোর মুখও দেখেছে আলহামদুলিল্লাহ। মূলতঃ বাংলাদেশের অন্যতম দ্বীনি এবং ইলমী ব্যক্তিত্ব হজরত প্রফেসর হামিদুর রহমান দা.বা.-এর সরাসরি উৎসাহেই এই কাজটি সম্পন্ন হয়, যিনি একইসাথে হযরত মাওলানা মুহাম্মাদুল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর রহঃ এবং ভারতের মুহিউসসুন্নাহ হযরত মাওলানা শাহ আবরারুল হক রহঃ খলীফা এবং এযুগের ইংরেজী শিক্ষিত দ্বীনদারদের জন্য আলোকবর্তিকা। তিনিই বক্ষ্যমাণ ইংরেজী বইটি মাকতাবাতুল ফুরকান-এর স্বত্বাধিকারী মুহতারাম Muhammad Adam Ali হাফি.- কে ডেকে নিজেই হাতে তুলে দিয়ে অনুবাদ করার জন্য বলেন।
.
এবার বইটি সম্পর্কে খানিকটা আলোকপাত করা যাক।
.
বইয়ের নাম “ইসলাম সম্পর্কে প্রত্যেক খ্রিস্টানের যা জানা উচিত” (What Every Christian should know about Islam)। লেখিকা রুকাইয়া ওয়ারিস মাকসুদ। মূল বইটি দি ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ব্রিটেইন থেকে প্রকাশিত।
ইসলামের মৌলিক বিষয়াদি পরিচিত করিয়ে দেওয়ার জন্য বাংলাভাষায় এখন পর্যন্ত বেশ কিছু বই-পুস্তক রচনা করা হয়েছে। আবার ইহুদি-খ্রিস্টান এবং মুসলিমদের একটি অদৃশ্য বন্ধন রয়েছে যা ইব্রাহিম আলাইহিস সালামের সূত্রে গাঁথা। কিন্তু আমরা যারা মুসলিম রয়েছে তাদের পার্সপেক্টিভ থেকে অনেকেই আমরা এটি এড়িয়ে যাই। আমাদের মনে একটি টিপিকাল ধারণা গেঁথে বসে আছে যে এই অন্য ধর্মাবলম্বীরা কাফের, সরাসরি অবিশ্বাসী। এই ধারণা থেকেই বেশিরভাগ সময়ে আমরা ইসলামের মত পরম সত্যের দিকে দ্বীনি দাওয়াত দেওয়া থেকে দূরে থাকি। “What Every Christian should know about Islam”- এর অনুবাদ ইসলাম সম্পর্কে প্রত্যেক খ্রিস্টানের যা জানা উচিত-এ খৃষ্টবাদ এবং ইসলামী থিওলজি মৌলিক পার্থক্য এবং মিলসমূহ রয়েছে তা বিভিন্ন প্রশ্নোত্তরের ভিত্তিতে সন্দেহ দূরীভূত করা এবং পরম সত্যের আলো পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে চমৎকার ভাবে আলোচনা করা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট কিছু প্রশ্নের ভিত্তিতে প্রথমতঃ ইসলামের ধর্মীয় বিশ্বাস ও আচার-আচরণের ফান্ডামেন্টাল ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে আধুনিক বিশ্বে, বিশেষ করে পশ্চিমে ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত মানুষদের মনে গেঁথে দেওয়া ইসলাম ও মুসলিম সম্পর্কে বিভিন্ন ম্যানিপুলেটেড বিশ্বাস এবং বহুল জিজ্ঞাসিত কিছু বেসিক প্রশ্নের জবাবও তুলে ধরা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, সারা দুনিয়াতে ইসলামোফোবিয়া আক্রান্ত বহু মানুষ এখনো মনে করে যে ঠিক আগের মতই ক্রুসেড বিদ্যমান এবং মুসলিমরা তাদের ফান্ডামেন্টাল শত্রু। বইটি শুরু হয়েছেই ” মুসলিমরা শত্রু নয়- ক্রুসেডের সমাপ্তি ঘটেছে!” শিরোনামে ব্যাপারটিকে পরিষ্কার করার মাধ্যমে। পরবর্তীতে বহুল জিজ্ঞাসিত যে সকল প্রশ্ন রয়েছে সেগুলোর উত্তর দেওয়া হয়েছে সুচিন্তিতভাবে, রেফারেন্স এর ভিত্তিতে, এবং যুক্তির নিরিখে।
এভাবে বইয়ের মোট ৪ টি অধ্যায়ের প্রথম ২ টি অধ্যায়ে ইসলামের ধর্মীয় বিশ্বাসের স্বরূপ এবং ইসলামের ধর্মীয় দায়িত্ব ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করা হয়েছে চমৎকার এবং প্রিসাইজ ভাবে। তৃতীয় অধ্যায়টি রাখা হয়েছে বিশেষত ইসলাম সম্বন্ধে অজ্ঞ ইহুদি-খ্রিস্টানদের পক্ষ থেকে থাকা বিভিন্ন প্রশ্ন-উত্তরের জন্য। চতুর্থ অধ্যায়ে লেখিকা খ্রিষ্টধর্মের যাবতীয় অসঙ্গতির বিপরীতে ইসলামের সৌন্দর্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন এবং সত্যানুসন্ধানী যে কোনো মানুষই তা থেকে উপকৃত হতে পারবেন। বিবিলিকাল টেক্সটের ভিত্তিতেই তিনি প্রমাণ করেছেন এসব। বইটিতে প্রতিটি প্রশ্নের জবাব দেওয়া হয়েছে দা’ওয়াতি মেজাজে, যুক্তির নিরিখে, সত্যের নিরূপণে, অতিরঞ্জিতা-বিবর্জিতভাবে।
.
আধুনিক বিশ্বে ইসলামোফোবিয়া এর কনটেক্সটে “পৃথিবীতে যত অশান্তির মূলে মুসলিম সম্প্রদায় দায়ী, সমস্ত রকম হিংসা-বিদ্বেষের ছড়াছড়ি মুসলিমদের জন্য” অথবা, “মুসলিমদের জন্যই মুসলিমরা আক্রান্ত হচ্ছেন এবং হত্যার ঢল মেমেছে”, “মুসলিমরা যে দেশে থাকবে সেই দেশেই অশান্তি ছড়াবে” ইত্যাদি ইত্যাদি ডিসকোর্সগুলো মিডিয়াগুলোর মাধ্যমে ম্যানিপুলেটেডভাবে প্রচার করা হচ্ছে। এর বিপরীতে এই সংক্ষিপ্ত ও সহজ বইটিতে ইসলামের মূল ভাবধারা ও সৌন্দর্য বর্ণনা করার চেষ্টা করা হয়েছে সত্যের নিরিখে। আশা করা যায়, এতে অমুসলিমদের মনে ইসলাম সম্পর্কে যে অহেতুক মিথ্যা ভয় ও নানা সন্দেহ দানা বেঁধে ওঠে, তা দূরিভূত হবে।
.
পাঠ অনুভূতিঃ আমাদের সোসাইটিতে অনেক মানুষ আছেন, থিওলজিকাল আর্গুমেন্ট পছন্দ করে থাকেন। সাম্প্রতিক সময়ে, বিশেষভাবে নাস্তিকতা-আস্তিকতা বিষয়ে এধরনের আলাপ বিভিন্ন বইয়ে চলে এসেছে। কিন্তু, একটু ইন-ডেপথ চিন্তা করলে দেখা যাবে, অন্য ধর্মের কমিউনিটি যারা আমাদের আশেপাশে বসবাস করছেন, তাদের অনেকের আর্গুমেন্টটা কিন্তু আস্তিকতা-নাস্তিকতা নিয়ে না, মোটাদাগে ধর্মবিশ্বাস নিয়ে। আমাদের দেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ইসলামের দিকে দা’ওয়াতের জন্য কিছু চমৎকার কাজ হয়েছে। তারপরেই রয়েছে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়। এই খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সাথে মুসলিমদের অনেকাংশে সাদৃশ্য বিদ্যমান থাকলেও তারা তাদের আসমানি কিতাব বিভিন্ন টাইমলাইনে মানুষ কর্তৃক বিকৃত এবং ম্যানিপুলেটেড হয়ে যাওয়ার দরুন, সামঞ্জস্যপূর্নভাবে ইসলামের মত পরম-সত্যটিকে গুছিয়ে জানার কোন মাধ্যম সেভাবে পায়না। আসলে শুধু তর্কের খাতিরে নয়, দা’ওয়াতের মেজাজে আমাদের বাংলাভাষায় এমন একটি ম্যানুস্ক্রিপ্ট দরকার ছিল, যা মূলতঃ এমন কারও লেখা, যিনি জেনে-শুনে-বুঝে খ্রিষ্টান থেকে ইসলামে কনভার্ট হয়েছেন। নিজের পক্ষ থেকেই তার সেই জানার ভিত্তিকে সরল করে উপস্থাপন করেছেন যুক্তির পরতে, কম্প্যারাটিভ এনালাইসিসের মাধ্যমে। অন্য একটি ধর্মবিশ্বাস কে “রদ্দ” করার জন্য নয়, বরং নিরেট সত্যতা তুলে ধরার জন্য। সর্বোপরি একটি “বাইবেলিক ওয়ার্ল্ড ভিউ” থেকে মুসলিম বিশ্বাসের প্রতি অনবদ্য এক “প্রাইমার” বলা যায় বইটিকে।
.
বইটি একটি অনুবাদ-কর্ম। অনুবাদ চলাকালীন এর সাথে আমারও এই মহতী কর্মজজ্ঞের সাথে সামান্য সংযুক্ত হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল। আসলে অনুবাদ, কোনো গ্রন্থ বা মুদ্রিত পাঠ্যবস্তুর টিকে থাকা নিশ্চিত করে। ইংরেজিতে বক্তব্যটি এমন, ‘Translation ensures the survival of a text.’। অনুবাদ আসলে কোন নির্দিষ্ট একটি লেখার বা কর্মের অন্যজীবন দেয়–এক নতুন মৌলিক অস্তিত্ব সৃষ্টি করে অপরাপর ভাষায়। সেদিক থেকে এই বইয়ের অনুবাদ-কর্ম মোটেই সহজ কিছু ছিলনা, যা বইটির অনুবাদক ও প্রকাশক মুহাম্মাদ আদম আলী নিজেই উল্লেখ করেছেন। আমার পক্ষ থেকে ইংরেজি টেক্সট এর সাথে মিলিয়ে পড়তে গিয়েই বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়েছে! তাহলে পুরো অনুবাদ-কর্ম কতটা ধৈর্য ও ধী-শক্তির পরিচায়ক ছিল তা বোধগম্য। আল্লাহ অনুবাদককে উত্তম প্রতিদান দান করুন। কয়েকটা ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ থিওলজিক্যাল ইনসিডেন্ট এবং তত্ত্বের সত্যাসত্য নিরূপণ এবং খোঁজখবর নিয়ে প্রত্যেকটির সঠিকতা সম্পর্কে যাচাই করে সত্যাসত্য নিশ্চিত হওয়া এবং প্রয়োজনীয় টিকা সংযোজন এই বইয়ের আরেকটি শক্ত ভিত্তি। যাহোক, আমি ব্যক্তিগতভাবে আল্লাহর কাছে অনিঃশেষভাবে কৃতজ্ঞ যে আল্লাহ আমার এই ক্ষুদ্র, নালায়েক, নাচীজ জীবনে এই বইটির সাথে সংযুক্ত থেকে ছোট্ট একটা খিদমতের আঞ্জাম দেওয়ার সৌভাগ্য দিয়েছেন। আল্লাহ এটিকে আমার নাজাতের ওয়াসিলা বানিয়ে দিন।
.
“ইসলাম সম্পর্কে প্রত্যেক খ্রিস্টানের যা জানা উচিত” বইটির শিরোনামেই এর টার্গেট রিডার অনুমেয়। কিন্তু একজন প্রাক্টিসিং মুসলিম হিসেবে এই বইটি কেন পড়া উচিত? এর একমাত্র উত্তর হল দা’ওয়াতের মেজাজ তৈরি করার জন্য এবং দা’ওয়াতি উদ্দেশ্যে। যাদের জন্য বইটি রচিত এবং অনূদিত হয়েছে, তাদের কাছে বইটি পৌঁছাবার দায়িত্ব একজন মুসলিম হিসাবে নিতান্তই দা’ওয়াতি কাজ। ওলামায়ে কেরাম এ ব্যাপারে একমত যে, অমুসলিম ভাই-বোনদেরকে ইসলামের দা’ওয়াত দেয়া ফরজে কেফায়া। অনেকে বলেছেন সাধ্যানুযায়ী ফরজে আইন। বইটির যে সাবজেক্ট ম্যাটার রয়েছে সেটির উপর ভিত্তি করে বইটি দা’ওয়াতি কাজের জন্য একটি অসাধারণ টুলস হিসেবে কাজ করবে ইন শা আল্লাহ। কাজেই মুসলিমদের ঘরে ঘরে বইটির কপি থাকা উচিত বলে আমার এন্ড থেকে আমি দৃঢ়ভাবেই বিশ্বাস করি।
বইয়ের তৃতীয় অধ্যায়টি রাখা হয়েছে বিশেষত ইসলাম সম্বন্ধে অজ্ঞ ইহুদি-খ্রিস্টানদের পক্ষ থেকে থাকা বিভিন্ন প্রশ্ন-উত্তরের জন্য। যেমন *ইসলাম কি আধুনিক বিজ্ঞানের সাথে তাল মেলাতে সক্ষম? *মুসলিমরা কি সর্বদা সংঘর্ষে লিপ্ত? *মুসলিমরা কি চরমপন্থী? *সুন্নি এবং শিয়া মুসলিমদের মধ্যে পার্থক্য কি? *মুসলিমরা শিশুদের যত্ন নেয় কিভাবে? *মুসলিম পুরুষরা কি নারীদের নির্যাতন করে? *মুসলিমরা কি তাদের স্ত্রীদেরকে বেত্রাঘাত করে? *অধিকাংশ মুসলিমের নামে কেন “আব্দুল”, “বিন”, বা “আল” থাকে? *মুসলিমরা শুয়োরের গোশত খেতে পারেনা কেন? *মুসলিমরা কি সারাবিশ্ব দখলে নিতে চায়? *ইসরাইল এবং প্যালেস্টাইনের সমস্যাটা মূলত কোথায়? *কিছু ইসলামী শাস্তির বিধান কি নিষ্ঠুর নয়? *চারকোনা আকৃতির কাল ঘরটি মূলত কি? ইত্যাদি ইত্যাদি! বইটিতে প্রতিটি প্রশ্নের জবাব দেওয়া হয়েছে দা’ওয়াতি মেজাজে, যুক্তির নিরিখে, সত্যের নিরূপণে, অতিরঞ্জিতা-বিবর্জিতভাবে।
বইয়ের চতুর্থ অধ্যায়ে লেখিকা খ্রিষ্টধর্মের যাবতীয় অসঙ্গতির বিপরীতে ইসলামের সৌন্দর্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন এবং সত্যানুসন্ধানী যে কোনো মানুষই তা থেকে উপকৃত হতে পারবেন। বিবিলিকাল টেক্সটের ভিত্তিতেই তিনি প্রমাণ করেছেন ঈশ্বর একজনই। মুসলিমদের আল্লাহই তাদের ঈশ্বর, যিনি এক এবং অদ্বিতীয়। খ্রিষ্টধর্ম ও ইসলাম এর পাশে একটি এখানেও কিছু চমৎকার প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে, যেমনঃ *যীশুর প্রতি বিশ্বাসে মুসলিমদের সঙ্গে একজন খ্রিস্টান এর মৌলিক পার্থক্যটা ঠিক কোথায়? *ত্রিত্ববাদের অসারতা কোথায়? *পার্সোনাল স্যালভেশন বা ব্যক্তিগত পরিত্রাণ সম্পর্কে যীশুর শিক্ষা সম্পর্কে মুসলিমরা কি ধারনা রাখে? *মোহাম্মদ (সঃ) যদি প্রকৃতই নবী হয়ে থাকেন তাহলে বাইবেলে যীশুর মত তার আগমনী ঘোষিত হল না কেন? *এ ধরনের বেশ কিছু প্রশ্নের জন্য বইতে উল্লেখিত ওল্ড এবং নিউ টেস্টামেন্ট-এর উদ্ধৃতিসমূহের মাধ্যমেই ইসলামের সত্যতা এবং বর্তমানে প্রচলিত খ্রিস্টধর্মের অসঙ্গতিগুলো দা’ওয়াতি মেজাজে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার সাথে সাথে সমান্তরালভাবে এতে ইসলামের ধর্মীয় বিশ্বাস ও আচার-আচরণের ব্যাখ্যা তুলে ধরা হয়েছে সংক্ষিপ্ত এবং ধারাবাহিকভাবে।
.
বরাবরের মতই অনুবাদের মান, বইয়ের মলাট, প্রচ্ছদ ডিজাইন, কালার, ছাপা ও বাঁধাই, কাগজের মান সবকিছুই অসাধারণ হওয়ার মানদণ্ডে উত্তীর্ণ আলহামদুলিল্লাহ। বইটি প্রকাশিত হবার সাথে সাথেই মুহতারাম আদম আলী হাফি. ২ কপি বই হাদিয়া পাঠিয়ে দিয়েছেন! চমৎকার বইটি হাতে পেয়ে যারপরনাই পুলকিত হয়েছি। তাকে আন্তরিক মোবারকবাদ। মাকতাবাতুল ফুরকানকে আল্লাহ দ্বীনের খেদমতে খুব কবুল করুন। ফুরকান পরিবারের জন্য দু’আ ও সালাম। একজন মুসলিম হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে দাওয়াতি কার্যক্রমের জন্য বইটির বহুল ব্যবহার এবং প্রচার কামনা করছি। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বইটির উদ্দেশ্যকে খুব ক্ববুল করুন। সত্যানুসন্ধানী মানুষকে আল্লাহ তায়ালা ইসলামের অনুপম সত্যের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করার তৌফিক দান করুন। বইএর লেখক, অনুবাদক, প্রকাশক এবং পাঠকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে কবুল করুন।
————————————–
বই: ইসলাম সম্পর্কে প্রত্যেক খ্রিস্টানের যা জানা উচিত (“What Every Christian should know about Islam”-এর বাংলা অনুবাদ)
মূল লেখিকা: রুকাইয়া ওয়ারিস মাকসুদ
অনুবাদ: মুহাম্মাদ আদম আলী
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ১৬০
প্রকাশনী: মাকতাবাতুল ফুরকান
মূল্যঃ ১৫০ টাকা (মুদ্রিত মূল্যের উপরে ৫০% ছাড়ে)
অনলাইন ছাড়াও বইটি পাওয়া যাচ্ছে মাকতাবাতুল ফুরকানের বাংলাবাজার এবং উত্তরা বিক্রয়কেন্দ্রেও।